পুরুষের যৌন সমস্যা বলতে সাধারণত মিলনে অনিহা, অথবা বীর্যপাতে সমস্যা। যেমন:- দ্রুত বীর্যপাত, শুকনা বীর্যপাত কিংবা বীর্যপাতে অতৃপ্ত, পুরুষাঙ্গ শক্ত না হওয়া (ইরেকটাইল ডিসফাংশন) বা উত্তেজনার পর পুরুষাঙ্গ তার স্বাভাবিক অবস্হায় না আসা (Priapism) ইত্যাদিকে বুঝায়।

যৌন সমস্যা সাধানতঃ দুই প্রকার।

(১) প্রথমতঃ শারীরিক

(২) মানসিক।

পুরুষের শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ফলাফল হিসেবে যৌন সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।

শারীরিককারণ: অনেক ধরণের শারীরিক কারণে যৌন সমস্যা তৈরি হতে পারে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, রক্তনালী সংক্রান্ত রোগ, স্নায়ু রোগ, হরমোন ভারসাম্যহীনতা, দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন কিডনি বা লিভারের রোগ এবং অতিরিক্ত মদ্যপান, নিয়মিত মাদক নেওয়া ও ঔষধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ইত্যাদি। এছাড়াও, কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ড্রাগসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যৌন ইচ্ছা এবং ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।

মানসিককারণ: কর্মস্থলে চাপ ও অস্থিরতা, যৌন সক্ষমতা নিয়ে অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন বা দুশ্চিন্তায় থাকা, সম্পর্ক নিয়ে জটিলতা, ডিপ্রেশন, অপরাধবোধ এবং অতীতের কোন ঘটনা বা সেক্সুয়াল ট্রমার প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি মানসিক কারণে যৌন সমস্যায় ভুগতে পারেন যেকোনো পুরুষ।

শারীরিক সমস্যা আবার কয়েক ভাগে বিভক্ত।

(১) যৌন অক্ষমতা

(২) যৌন দূর্বলতা

(৩) যৌন রোগ।

পুরুষেরপ্রধান দুটিসমস্যাহল

যৌন অক্ষমতা – লিঙ্গ যথেষ্ট শক্ত না হওয়া বা ইম্পটেনসি।

যৌন দূর্বলতা দ্রুত বীর্যপাত হওয়া বা প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান।

লিঙ্গযথেষ্টশক্তনাহওয়াবাইম্পটেনসিকী?

এটা এমন একটি অবস্থা যখন একজন পুরুষের লিঙ্গ সফল ভাবে যৌন মিলন করার মত যথেষ্ট শক্ত হয় না বা বেশিক্ষণ শক্ত থাকে না বা যৌন মিলন করার ইচ্ছা জাগে না ।

উপরের তিনটির যে কোনও একটা হলেই তাকে আমরা ইম্পটেনসি এর রোগী বলব।

কীকীকারণেহতেপারেসমস্যাটি?

১. মস্তিষ্ক

২. আবেগ

৩. স্নায়ু

৪. হরমোন

৫. রক্তনালী

৬. মাংসপেশি

এ ছাড়াও কিছু শারীরিক সমস্যাও থাকে, যেমন-

১. হৃদরোগ, রক্তের চর্বি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ওজন আধিক্য, ধূমপান, মদপান, পুরুষ হরমোন এর স্বল্পতা, পারকিনসন, মাল্টিপল এসকলেসীস, জেনিটাল এরিয়াতে অসুখ বা বিভিন্ন যৌন রোগ ইত্যাদি।

২. মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, মানসিক রোগ, পার্টনারের সাথে মানসিক দূরত্ব, পার্টনারের অসহযোগিতা, মনে মনে অন্য কারোর প্রতি আকর্ষিত হওয়া ইত্যাদি।

দ্রুতবীর্যপাতবাপ্রিমাচ্যুরইজাকুলেশান

দ্রুতবীর্যপাতবাপ্রিমাচ্যুরইজাকুলেশানকি?

যৌন মিলনের সময় যখন একজন পুরুষের বীর্যপাত তার বা তার পার্টনারের চাওয়ার আগেই হয়ে যায় তখন তাকে দ্রুত বীর্যপাত বা প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান বলে।

এই সমস্যা হঠাৎ হঠাৎ হলে সমস্যা নাই কিন্তু যদি প্রায় বা সব সময় ঘটে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে।

প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান সাধারণত ২ প্রকার।

১। প্রাইমারি।

২। সেকেন্ডারি।

প্রাইমারি প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান- প্রায় বা সবসময় যদি যোনীতে লিঙ্গ প্রবেশের ১ মিনিট বা তারও কম সময়ে বীর্যপাত হয় তবে তাহাকে প্রাইমারি প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান বলে।

সেকেন্ডারি প্রিমাচ্যুর ইজাকুলেশান- যোনীতে লিঙ্গ প্রবেশের ১ মিনিট বা তারও কম সময়ে বীর্যপাত হওয়া (যার পূর্বে সফল ও আনন্দময় যৌন মিলনের রেকর্ড আছে)

যৌনমিলনেরআসলসময়কত?

সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে প্রচুর ভুল ধারণা আছে। কেউ মনে করেন ১০ মিনিট বা তার বেশি, কেউ মনে করেন ২০ মিনিট বা তার বেশি সময় যৌন মিলন করতে হয়। আসলে এগুলো ভুল ধারণা। বেশির ভাগ মহিলাই মানসিক ভাবে ইনভল্ভ না থাকায় বা অতিরিক্ত লজ্জার কারনে বা সঠিক ভাবে উপভোগ করতে না জানায় সঠিক সময়ে তৃপ্ত হতে পারেন না। অনেক সময় পুরুষের অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণেও আগে বীর্যপাত হয়ে যেতে পারে। ফলে বেশির ভাগ সময় স্বাভাবিক সময়কেও দ্রুত বীর্যপাত বলে ধরে নেওয়া হয়।

ডাক্তারি মতে যৌন মিলনের সময় লিঙ্গ প্রবেশের পর থেকে বীর্যপাত পর্যন্ত সাধারণত ৫ মিনিট বা তার বেশি।

দ্রুতবীর্যপাতকাদেরহতেপারে?

-যাদের মানসিক রোগ আছে।

-যারা তামাক, মদ, মাদক গ্রহণ করে।

-যাদের বড় ধরনের শারীরিক রোগ আছে।

-বিবাহ বহির্ভূত যৌন মিলনে।

-অতিরিক্ত উত্তেজনার সহিত মিলনে।

-অতিরিক্ত ভয় বা টেনশান থাকলে।

-পার্টনারের সাথে যথেষ্ট মানসিক মিল না থাকলে।

এটি একটি কমন ও সমাধান যোগ্য রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যথাযথ কাউন্সেলিং এর মাধ্যমেই ভালো হয়ে যায়।

এছাড়া-

-মাদক কে না বলতে হবে।

-মদ তামাক থেকে দূরে থাকতে হবে।

-বিবাহ বহির্ভূত যৌন মিলন থেকে দূরে থাকতে হবে।

-পার্টনারের সাথে যথেষ্ট মনের মিল থাকতে হবে।

-নারীকেও তার পার্টনার কে যথেষ্ট সাহায্য করতে হবে।

-মানসিক চাপ মুক্ত থেকে যৌন মিলনকে উপভোগ করতে হবে।

যৌনসমস্যাপ্রতিরোধেযাকরবেন

যৌন সমস্যা থাকুক আর না ই থাকুক যৌন স্বাস্থের প্রতি সব সময় যত্নশীল হতে হবে।

❏ প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন

❏ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে

❏ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত

❏ শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি

❏ মানসিক চাপ (Stress) যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করতে হবে

❏ জিংক ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে

❏ ধুমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করা উচিত

সর্বোপরি এরপরেও সমাধান না হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পুরুষের যৌন সমস্যার হোমিওপ্যথিক ব্যবস্থাপনা

যৌন সমস্যায় কার্যকরী সমাধানে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন হোমিওপ্যাথিক রেমেডিস সেবন করুন।

যৌনসমস্যাসমাধানেরজন্যঅভিজ্ঞহোমিওপ্যাথের ফ্রিপরামর্শনিন। সরাসরি যোগাযোগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *